দুর্গা পুজো শেষ, কিন্তু পুজোর রেশ এখনও আকাশে। কালিপুজোও দোরগোড়ায়। মন আজকাল ছোটবেলার দাপাদাপি, উৎসাহ, রোমাঞ্চঘন পুজোস্মৃতিগুলোকে বেশি হাতড়ায়। প্রায়শই হাতড়ায়। ছোটবেলা আমার সুখের ছিল এই টুকরো আনন্দগুলোর আনাগোনায়। সাঁত্রাগাছিতে মেট্রো, বেদুঈন ছিল না। পার্ক স্ট্রিট-এর জাঁক আর রোশনাই ছিল না। কিন্তু, এই পুজোর সময়টাতে সে অন্য অনেক বড় শহরের থেকে বেশি ধনী হয়ে উঠত। তাই আজো সে মনের চিলেকোঠায় বাস করে। যেখানে আমি আজও উঠে যাই। নিভৃতে।
কিছু কথা কবিতা নয়, কিছু আবার কবিতা হয়।/ কিছু ছন্দ কঠোর, কিছু পেলবতার আঁচড় কাটে।/ এই সবেরই সম্মিলনী আমার এই ব্লগের মাঝে।
Saturday, October 22, 2016
শীতের আমেজ
হায়দ্রাবাদ (এপ্রান্তে বলে, হাইদরাবাদ)শহরটা আর যে যে কারণেই হোক, শীতের জন্যে খ্যাত নয়, বিখ্যাত তো নয়ই। কিন্তু, এবছরটা, একটু অন্য রকম হতে পারে। বাতাসে একটা শীতকালীন আমেজ। এ শহরের রীতি মেনে এটুকু অনেকটা। তা এই আমেজ গায়ে মেখে যখন অফিসমুখো হই বা হপ্তান্তে যখন সকালে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দি, মনে পড়ে ছোটবেলায় শীতের দুপুরে লেপে সেঁধানোর কথা। মনে পড়ে, গায়ে দেওয়া লেপের নানান ভাঁজ আর খাঁজ, আর সেই আনাচে কানাচে না-ঘুমন্ত এই আমি সৃষ্টি করছি কিছু খেলা। এই কলম-ভিলেন ওঁত পাতে এই ভাঁজে কলম-নায়কের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে, তো ওই উঁচু হাঁটু-পাহাড়ে দাঁড়িয়ে ডাকু মঙ্গল সিং। আর মা-বাবা যে লেপের তলায় ঘুমন্ত, ওটা অন্য এক জগৎ, অন্য অ-জানা বিপদ সংকুল। আহ্, শীত রোদের আমেজ আর চায়ের স্বাদ দুই-ই বেড়ে গেল মনে হচ্ছে! হ্যাঁ, রোদের সঙ্গে ছোটবেলাও পীঠে চাপড় মারছে যে!
দীপাবলি
দীপ জ্বেলে যাই অন্ধকারে, অমানিশা তুচ্ছ করে।
দ্বারের পারে কে দাঁড়ায়ে, মিষ্টি হাসির ঝিলিক তুলে?
হোক না তিমির নিবীড়তম, শুভর আকাশ প্রদীপ জ্বলে।
Thursday, September 22, 2016
দুগগা আসেন
ঢ্যাংকুড়কুড় ঢাকের সুরে দুগ্গা আসেন বছর ঘুরে।
বন্যা, ক্ষোভ আর দলাদলি, এই নিয়েই আলোয় চলি।
কাশের দোলন, শরৎ শিশির, কুমোরটুলি আঁচড় তুলির।
এরই মধ্যে পড়ছে মনে, ছোট্টবেলা, ফুর্তি প্রাণে
মন্ডপেতে হত্যে দেওয়া, কাব্য-গানে মাতাল হওয়া।
Tuesday, September 20, 2016
রাতের আদর
রাতের নির্জনতায় বয় চেনা পথ অচেনা-রূপ।
মিশকালো রজনী, অদেখা ছন্দের বাসে আরো দ্রুতগামী;
রাত-পরীরাই বোঝে যামিনীর জাম-এর কদর।
ভোরেই ভাঙচি, রাত-রতি শেখায় উষ্ণ আদর।
Friday, September 16, 2016
মন বনাম মগজ
মন মগজের লড়াই নিয়ে লিখতে গিয়ে আজি
জানতে পেলুম, মন কিছু নয়, মগজ আসল কাজি।
লিম্বিক, পেরিইটাল, টেম্পরালের কারসাজি
লোবের ফেরে মানুষ ফেরে, লাগায় দিল-কি-বাজি।
মগজ ধোলাই কোথায় যে হয় জানতে যদি পারি,
আজ এখনই সেইখানেতে হত্যে দিয়ে পড়ি।
Tuesday, September 13, 2016
জলের দর
পড়শি কাটে পড়শিকে।
কে ক'ফোঁটা জল পাবে।
জানের দাম, জলের দর
আঁখির পানি আঁজলা ভর।
রক্ত-নদী ছলাৎ ছল
লাশের মুখে কাবেরী-জল।
Sunday, September 11, 2016
বাবা
১
বাওবাব, বট, বাবা।
ব-এর বর্ণে বলের ঠিকানা।
২
বয়েসের ঝুরি দেয়াল বেয়ে নামে,
স্মৃতিচারণের ছলে ইতিহাস খোঁড়াখুঁড়ি।
কথায় চলে পানসি শ্রীহট্টের সেই গ্রামে,
দেখি এক সদ্যবালকের মাঠময় ছোটাছুটি।
৩
হাত ধরে চলে আসা বহু পথ,
এ-গলি ও-গলি, কোলকাতা পাড়াময়।
আবার টুকরো ছবি, সিনেমাতে উঁকিঝুঁকি
বইয়ের আড়ালে, কাব্যের আঁকিবুঁকি।
৪
কণ্ঠে জলদমন্দ্র স্বর;
আবৃত্তির অদৃশ্য বৃত্ত রচনা হয়।
৫
ভরসার বুক ফের ছুঁয়ে থাকা।
তোমাকে ঘিরে আমার আবার বালক হওয়া।
মাতৃ-প্রতিমা
প্রতিমার মুখ শুধু মা-এরই আদল,
স্নেহাশীষ চুম্বন আদরের ঢল।
মা-এর আঁচলে যে বিশ্ব ভুবন
শান্তি পেয়েছি আমি পল অনুখন।
তর্কের শোণিতে হয়েছে স্নাত
আমাদের কথনের সপ্তকাহনও।
শহরের দূরত্ব বাড়ায় যে ভার,
দূরভাষে স্বান্ত্বনা কন্ঠ তোমার।
একাকিত্বের ব্যথা দূর বিগত,
কণ্ঠের মধুমাস শরতের মত।
বয়েস করেছে বাসা, শীর্ণ কাঠামো,
বিকশিত তবু হাসি কোজাগরসম।
বাল্যের ঘোরাফেরা তোর ছায়াতলে,
দুপুরের রোদ্দুরে আদর সে চুলে।
কতবার ফিরিয়েছি মুখ ক্রুর জেদে,
স্নেহ তবু বর্ষিত, ক্ষমা দুই চোখে।
আগমনী গান বাজে শারদ-গগনে
ছোটবেলা কত স্মৃতি, এই মনে জাগে।
সময় সে বয়ে চলে নদী-ধারা প্রায়,
তোর ডাক আজো বলে, "খোকা, কাছে আয়।"
বোধন
একমুঠো শিউলি হাতে নিয়ে ছুটছি
কাশফুলঘেরা রেলস্টেশনটা ঘেঁষে ছুটছি
বাতাসে লেগে থাকা ঢাকের বাদ্যিকে শ্রবণে নিয়ে ছুটছি।
বোধনের স্নিগ্ধতায় তোমায় দেখব বলে ছুটছি।
সঙ্গিনী
তুমি যেই ভেলা হও
আমি হই নদী
তোমাকে ধারণ করে
অকুলেই গতি।
প্লাবনে দুকুল ভাসে
ভাসে দুই চোখ,
প্রেমে ভাসে হৃদিমাঝ
বিধৌত শোক।
মগ্নমুগ্ধ
তুমি যখন মগ্ন ছিলে নদীর ধারার কল্পনায়
মেঘের দেশে রাখাল বাঁশি বাজাচ্ছিল মগ্নতায়।
নিঠুর রোদের সরোষ আলো ছড়ায় তোমার কপালময়,
আমি শুধু দেখতে পেলাম এক বালিকা হাস্যময়।
অঝোর
বৃষ্টি ঝরে অঝোর, জোরে,
পিচ রাস্তা যাচ্ছে ধুয়ে।
শ্রান্ত মনও হচ্ছে স্নাত,
ভাবছে বসে,
"এই বৃষ্টি কান্না না তো?"
কোন চোখে আজ বান ডেকেছে?
কুল ভেসেছে, ঘর ডুবেছে।
বুঝি, মনের মাঝে টান উঠেছে,
বর্ষাতে তাই তান লেগেছে।
একুশে আইন - পুনশ্চ
একুশে আইনে ভরসা থাক
যুবা-শক্তি নিপাত যাক।
বেত্রাঘাত আর এমন কী,
শিক্ষা দেবার পদ্ধতি।
রাষ্ট্র জানে ঠিক-বেঠিক,
ভুলো না ভোটার আধুনিক।
শান্ত থাক, স্তব্ধ হও
পরিবর্তনের জয় কও।
ত্রাসের ফসল
লাঠির ঘায়ে ফাটল মাথা তরুণ প্রতিবাদের
শিক্ষালয়ে সরস্বতী কাঁদেন ব্যর্থ ক্ষোভে।
কোন আদর্শ সামনে রেখে চলছি কে তা জানে
চতুর্দিকে ত্রাসের ফসল ফলছে নির্বিবাদে।
নির্লজ্জ
অন্ধকারে হামলা করে
খোকন, নারী, নির্যাতনে
হাত পাকালে যা হোক বেশ
দৃষ্টি তবু নির্নিমেষ।
লজ্জা তোমার শিকেয় তোলা
পায়ে শেকল, বন্ধ গলা।
হাতই শুধু উন্মুক্ত
কর্ত্রী-ভজা অধীনস্থ।
থাক আর কেঁদ না মেকি কান্না,
মুরোদ তোমার আছে জানা।
জনক
জনক করেন হলাকর্ষণ
বক্ষ চেরেন মাটির
সীতা নামের ফসলটি পান
বন্ধন এ নাড়ির।
এমনি করেই অনেক জনক
হয়ে ওঠেন পিতা
পুত্র-কন্যা লালন করে
পুর্ণ জীবন গীতা।
কঠোর
আঁধার রাতে তোমার ঠোঁটে ভরসা পাব বলে
এগিয়ে দেখি সকল ফাঁকি, কখন গেছ চলে।
নিজের আত্মে অবলম্বন খোঁজার চেষ্টা করে
বিফল আমি, দিক-শুন্য ঘুরছি দ্বীপের তরে।
নিজের জন্যে নিজের বাঁচার পরীক্ষাটি কঠোর
রাত্রিবেলা স্বপ্ন দেখি বুকের ওপর পাথর।
একা পথ
একা পথ গিয়ে মেশে কোথায় কে জানে,
অকুল হয়তবা সে কোন বাঁকেরই সন্ধানে।
স্মৃতিময়, গতিময় শহর ভরে নিয়ে ঘ্রাণে,
পথের চলাচল শুধু সামনের পানে।
পথ কেন নেয় না বিশ্রাম কখনও, কে জানে।
ছুট তার বুঝি কোন সম্পর্কের টানে।
মুসাফির দলে যায় দিল তার বারবার,
পথ তবু পথ চায় পথিকের ফেরবার।
না-শেষ
শেষ বললেই হয় না তো সব শেষ
আকাঙ্ক্ষারা তবু বেঁচে থাকে
ক্ষণিক পরেই পতন হবে জেনেও
শিশির সেই ঘাসেই কিন্তু নামে।
হয়ত, নিমেষ পরে হারিয়ে যাবে তুমি
তাই আমার চাওয়া আজ আরো নির্নিমেষ
নিজের ভেতর ডুবছি আমি আবার,
জানতে পারছি ভালবাসার গভীরতর রেশ।
কালের গর্ভে লুকিয়ে থাকে বীজ
বীজের ফলের ধরণ কে বা জানে
ক্ষুধার্ত যে খায়নি কতকাল
হাত বাড়াবেই, যদি ভুখ কিছু বা কমে।
দ্বন্দ্ব
তপ্ত দিনের দাহের শেষে সন্ধ্যা শান্তি আসে
অপার্থিব জগৎ জুড়ে গ্রহ-তারা ভাসে।
কামনা দীর্ণ হৃদয় বলে আকাশসীমা ছাড়াই
শ্রান্ত চরণ প্রতিবাদী, বলে, "আর না! এবার দাঁড়াই।"
নতুন স্বপ্ন
কাব্য জলে নাইতে আসা
তোমায় আবার চাইতে বসা
দুপুর রোদের ঝিলিক মেখে
আমার আবার প্রেমিক হওয়া।
মন-পবনের নাও-এর পালে
লাগলো হাওয়া এই সকালে
শাম্পানে মোর কাব্য-দিস্তে
যুবক হচ্ছে আস্তে আস্তে।
ওই যে রক্ত-চন্দ্র ঝলক
মুগ্ধ, মুক্ত, আঁখির পলক
চাঁদের বুড়ির চরকা যেন
বুনছে নতুন স্বপ্ন কোন।
বিষন্নতা
সন্ধের অঞ্চল আজ রাত্রি মলিন
জীবনের একাপথ সতত জটিল।
চাঁদ দেখি এক ফালি মেঘের আড়ালে
রবি আলো ভিখ দিলে তার রূপ খোলে।
চির খালি তার ঝুলি ভরা হতাশে,
তবু বয় সমীরণ জানি কার আশে।
নির্ভীক
হবে নির্ভীক হতে, আরো নির্ভীক
এখনতো নই তত নির্ভীক।
মোহপাশ কিছু, টেনে ধরে পিছু
দিনমজুরির দায় মাথা রাখে নীচু।
ক্লেদাক্ত মন, শ্রান্ত চরণ
নুব্জ স্কন্ধ, মুদ্রার শ্রম
আর নিশ্বাসকেই বাঁচা বলে ভ্রম।
এমত জীবন এক নিগ্রহ
মনের অতলে দাবানল দাহ।
প্রেমের গান
তান সপ্তক তার দোর তক
এঁকে দেয় পথ, চাঁদ উজাগর।
প্রেমিকের মনে বাউলের তান
জ্যোৎস্না-মোহিত মাতাল উজান।
আলিঙ্গনেতে উষ্ণ উছাস
'রাত থেমে থাক,' অবোধের আশ।
হিসেব-নিকেশ
মানব-জীবন সস্তা অতি, খরচ হচ্ছে সন্ধ্যা রাতি
জলের তলায়, ছুরির ফলায়, গাড়ির চাকা, আর অগ্নি-গোলায়।
নবজাতকের যোগ্যবাস, সে মিথ্যে স্তোক আর কল্পভাষ।
অনুমতি
আগে ছিলে মৌনি তুমি, এখন দেখি কথা কও!
সেবার যখন রা কাড়নি আজও তবে স্তব্ধ রও।
দেশ গেল কি রসাতলে সেসব কথা পরে হবে,
আগে আসুন হিসেব কষি, কোন কথা কে কখন কবে।
হতাশা
নদীর আখরমালা যায় মিলায়ে
তরঙ্গের লয় ভাঙ্গে পাথুরে কুলে।
কাঁকড়ার চরিত্র প্রতিভাত ফের
কুটোহীন ভেসে যাওয়া দ্বিপ্রহরে।
অসমাপ্ত
উহ্য থাকে অনেক কথাই
অনেক কিছু বলার মাঝে।
অসমাপ্ত অনেক কাব্য
অনেক পদ্য লেখার ফাঁকে।
পূর্ণ হয় না অনেক চুমুই
অধরযুগল মেলার ক্ষণে।
অনেক ছবিই বিবর্ণ রয়,
রঙ তুলিতে মেশেনি বলে।
কল্পবেলা
কোন কল্পলোকে ভাসাও তরী ওহে না-বালক?
শৈশবকে ছুঁয়ে দেখার এক অছিলা?
তুলোট-মেঘে পক্ষীরাজ আর রাজকুমারীর এক ঝলক,
স্মৃতির মাঝে রোদ-ঝলমল দুপুরবেলা।
অশুভ
পিনাক থেকে লুপ্ত আজকে ছিলার টান
কল্কিদেবও শয্যাশায়ী -- অম্লশূল
দিবালোকে সহজে দৃষ্ট উল্কাপাত
একশয্যায় আলিঙ্গণে অহি-নকুল।
সব বয়ে যায়
দেউটি থেকে একটি একটি নিবছে পিদিম
আরতি, গানের সন্ধ্যেগুলো নিরব নিঝুম,
মানব-কায়া ছায়া-শরীর, শীতল, হিম।
সময় বলে, "সব বয়ে যায়, পুনশ্চতে জানিয়ে দিলুম।"
অপাংক্তেয়
নিজের দেশের মাটির বুকে কেন অপাংক্তেয়?
কেন সুস্থ মতের প্রতিটি ধ্বনি ছুরিতে বিক্ষত!
পরশুরামের কুঠারখানি ছোঁয়নি, এ তার ভুল
লেখনি স্তব্ধ, দেহ নিথর, কাঁদছো শাপলা ফুল?
আগুনে বেলুন
আকাশ থেকে নামলো বেলুন
দগ্ধ শহর; নাশের ফাগুন।
পুড়লো ঘর, পুড়লো বাড়ি,
ছোট্ট আঙ্গুল করলো আড়ি।
বন্ধ চোখ কোন স্বপ্নে মাখা?
বুঝি এমনি ফুরোয় রূপকথারা?
পূর্ণ-আলিঙ্গন
স্নিগ্ধতর হয়ে ঝরে তারার আলো
ধরণীতে চুঁইয়ে আসে প্রেমের পরশ কারো।
আঙ্গুলের কড়ে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের গাণিতিক গণন
বিরহ-আলোকবর্ষ পার হয়ে আজ পূর্ণ আলিঙ্গন।
শহিদ
তোমরা হলে বাক্যবাগীশ, আমরা হলাম যোদ্ধা
আমরা থাকি সমুখভাগে, পশ্চাতে সব বোদ্ধা।
তরুণদেরি রক্তে ভেজে অবণী যে বারংবার,
চা-পেয়ালা, কথার খেলা, ফাঁকতালেতেই সংহার।
সঙিন হাতে, নয়ন মুদে ভাবছিলাম কী জানে কে?
মেয়ের মুখের আধোবুলি, "কাল দেখেছি সান্টাকে!"
"কিন্তু সোনা, ক্রিস্টমাস সে গেছে কবেই!"
"যেদিন তুমি আসবে বাবা, ক্রিস্টমাস যে সেদিন হবে।"
ভাল থাকিস মামণিটা
আজ মুড়োল নটেগাছটা।
Saturday, September 10, 2016
নামকরণ
নেই কাজ তো খই ভাজ!
নামকরণের লগন আজ।
'গুরগাঁও' সে 'গুরুগ্রাম'
'মেরঠ' নাকি 'নুহ্' বা 'নাহ্'।
উন্নতির কি খেল রে বাহ্!
কলকাতাও হোক 'গণ্ডগ্রাম'!
(ভারতীয় কৌতুকে অভিভূত হয়ে)
পথ চলা
পতিত পথ, কাহিনীর হাট।
পথিকেরি কাছে ঠাকুমার ঝুলি।
কিছু ধূলি-ধূসরিত, কিছু সুরভিত বাট,
চারণের গান, চেনা সে গোধূলি।
অমৃতের স্বাদ সেই তো জেনেছে
পথের পিরিতে পথে যে ফিরেছে।
মহীনের ঘোড়াগুলি
তারা জেনেছিল মানুষে মানুষে নক্ষত্র-দূরত্বের শাপ;
তারা বলেছিল ধাঁধাতুল্য প্রেমের সংলাপ।
তাদেরি গান আকাশ-খিড়কিতে দেয় উঁকি,
অন্তরে ছোটে আজো মহীনের অদম্য ঘোড়াগুলি।
সময়
পাতা ঝরার সময় আসে,
বয়েস কেবল সামনে হাঁটে।
স্মৃতির গুচ্ছ সামলে রেখে,
একটুখানি হাতড়ে নিয়ে,
জীবনধারা জলকে চলে।
বার্তালাপ
ভয় পেও না, ঘাবড়িওনা
শান্তি-সেনার পদধ্বনির,
সুফল পাবে তোমরাই।
গুজবেতে কান দিওনা,
শুনোনা কেউ তার কথা,
সত্যিটা ভাই দেশপ্রেমিক,
আর সত্যিটা কই আমরাই।
কেন এত লোক মরছে?
থামছে না তো রক্ত-স্নান!
কবে সবাই এক হবে ফের,
বাজবে রবাব, গাইবে গান?
বন্দি --
এ-সব প্রশ্ন কালের পাতায়,
কিংবা দিল্লি-দরবারে।
ইঁট-পেলেট এর জবানবন্দি;
মানুষ ব্যস্ত কোন্দলে।
বৃষ্টি
আর আসিস নে ঝেঁপে, বুকটা ওঠে কেঁপে।
খড়কুটোর সে ঘর, উড়িয়ে নিল ঝড়।
ছেলে ছিল দস্যি বড়, জলের তলে শান্ত হল!
আর কি নিবি বাপ আমার?
ক্ষেত, খামার, গাঁ উজাড়।
চর্বিত চর্বণ
পুরনো ছবি ঘুরিয়ে দেখা
শিল্পীর তুলি মর্চে ধরা।
জং ধরা বাকে বাগীশের প্রেত,
প্রতিবাদ? না কি রোজনামচা?
ওষ্ঠ-মিলনই নয় চুম্বন,
অধর-সুধা তো হৃদি দর্পণ!
গোত্র
গোত্রের গাত্রে হিংসার নির্যাস।
জন্মের প্রভাতে প্রতিশ্রুতি
কোন সম্ভাবনার?
মানবতার অবক্ষয়, বহমান ত্রাস
রক্তস্নান, কৌলীন্য-গরিমার স্তুতি,
জন্ম দেয় কি রূপকথার?