Tuesday, July 28, 2020

হাঁটা

পায়ের তলার মাটিটা যেন কেমন
আশ্রয় দেয় না মোটে
তপ্ত কয়লা পায়ের তলে যেমন
ফোস্কা ভাগ্যে অমনি খালি জোটে।

বহূদূরের পথ যে আমার ভাই
গ্রামের নামটি আমার ভাসানপুর
কাজের দেশে কাজ তো আর নাই
ঘরের কুয়ো অভাব সমুদ্দুর।

শুনিয়েছিল হরেন কাকা আমায়
কারা না কি চাইত ভাতের ফ্যান।
আমার ছেলে উদাত্ত দাবি জানায়
হবেই না কি সে কমপ্ল্যান ম্যান।
                      

Monday, July 27, 2020

বাংলা

এ কোন আখর, এত লাল!
কে ঢেলেছিলে এত স্নেহ জোছনার মত?
সেদিন পেয়েছিল কি ধারাস্নান মাটির সে গাল?
কোন বর্ণের পরিচয়ে উদ্বেল ছিলে নিয়ে এত ক্ষত?

কণ্ঠ উজাড় করে আউড়েছ সহজ সে পাঠ
কোকিলও শুনেছিল ভুলে চেনা কলরব।
আরো ঢালো রঙিন সে বসন্ত, হে বিরাট
অর্ঘের স্মৃতিতে জাগুক ভালবাসা, ভাষার স্ব-রব।

Sunday, July 26, 2020

নটরাজ

মহাপ্লাবনের প্রতীক্ষারত
হে নটরাজ, নিদ্রামগ্ন,
বাজাও ডম্বরু
হোক না আজ শেষের শুরু।

Saturday, July 25, 2020

ঘনায়মান

ঘনঘোর ঘনঘটা গগনে জাগি উঠে,
দ্রিমি দ্রিমি তালে বাজে বাদল ডম্বরু;
চকিতে চমকি দামিনী আঁখি মেলে,
এ কোন উল্লাসে দামাল হল তরু!

নৃত্য পটিয়সী, অঙ্গে মূর্চ্ছনা
ধায় স্রোতস্বিনী সে, যুবতী ললনা।
স্বভাব চঞ্চল বাতাস সে উন্মাদ,
ছিন্ন করি ফিরে তপন-তপ্ত, রুক্ষ জটাজাল।

বর্ষা সমাগম দূর দিগন্তরে
এ কল্প কবি বুনে, নিমেষে মন্তরে।

(ভাবছিলাম জাভেদ আখতার সাহেবের 'ঘনন ঘনন' -এর প্রথম স্তবকটা কীভাবে অনুবাদ করা যায় কথার খেলাগুলো মাথায় রেখে। বাকিটা তারপর অবশ্যি আমার কল্পনা। হায়দারাবাদে এখন বৃষ্টি পড়ছে না। আনন্দ-বর্ষা শুধু মনে।)

বৃষ্টির ছাঁট

বৃষ্টিরা সব ঝাঁপিয়ে এল কালকে রাতে
জানলা-কপাট সপাট আঘাত গ্রিলকে করে।
তীব্র ছিল আলিঙ্গনের দাপট তখন,
নবাব-শহর পায়ের তলায় লেপ্টে রাখে
স্মৃতির মানিক, অলি-গলির গল্প অনেক
নাট্য-কাব্য; সিক্ত বাসে হূরের দলও গজল বোনে।

বর্ষাতুলি এমনি আঁকে রূপকথাদের
গাড়িরে চাকার তুফান ভেজায় শৈশবকে।
গাছের পাতার আঁজলা পানির ফিসফিসানি
'বইতে থাকুক ধারার শ্রাবণ অভিমানিন।  

Thursday, July 16, 2020

হতাশা

হঠাৎ করেই গান ধরেছে আজ হতাশা
তানপুরাতে সপ্তসুরের ধারাস্নান
জীর্ণ বাড়ির দরজা ঘেঁষে সবুজ বাসা
মনের  কোনে দিচ্ছে উঁকি হেলায় রাখা এক অভিমান।

মহীনের ঘোড়াগুলি

তারা জেনেছিল মানুষে মানুষে নক্ষত্র-দূরত্বের শাপ;
তারা বলেছিল ধাঁধাতুল্য প্রেমের সংলাপ।
তাদেরি গান আকাশ-খিড়কিতে দেয় উঁকি,
অন্তরে ছোটে আজো মহীনের অদম্য ঘোড়াগুলি।

নীলাম

নীলাম ঘরে দর উঠেছে, বিক্রি হবে গদি;
কে যেন এক বলেছিল 'গণ'রাই সব যন্ত্রী?
স্বপ্ন-নিদ্রা ভঙ্গ হলে রগড়ে চক্ষু দেখি,
ভাঙ্গা কেদারায় দাদু বসে, পুকুর গেছে চুরি।

বারিশ

পশলার বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে
এ শহর, নুয়ে গেছে
গাছ, মাটি, আর যত স্থিরতা।
বয়সের ভার স্নাত, চকমকে দৃঢ়তা।
আজ সব ধুয়ে সাফ
সব খুন আজ মাফ
মোর শহরকে ছাপিয়েছে ছলছল
স্নেহভরা বাদরা সে, স্নিগ্ধ, কী টলমল।
কোথা আছ বাহিরাও
মোর সাথে ভিজি লও
শহরের আঙ্গনে বাদরা, মন প্রাণ মতওয়ালা
তাল সুর মধুমাখা, উপচায় প্রকৃতির পিয়ালা।
আজ শ্যাম বাঁশি লয়, আজ নট নাচি যায়
পার্বতী, রাধিকা, সেই তাল শিখি লয়
বারিধারা সুর তোলে সব নদী তান ধরে
বর্ষার পারাবারে সকলে ভাসিতে চাহে
মোর শহরকে ভাসায়েছে ভরসা
মোর শহরের অঙ্গনে জুটিয়াছে, বরষা।