Thursday, May 10, 2012

আরাম

"আচ্ছা গরম কমবে কবে আপনি মশাই বলতে পারেন?"
"সবুর করুন ফলবে মেওয়া, চা খান না ততক্ষণে।"
পিঠে কড়া রোদকে নিয়ে খেজুরে আলাপ আর রসিকতা
প্রাতঃভ্রমণ শিকেয় রেখে ছায়ায় খানিক জিরিয়ে নেওয়া
সাস্থ্য রক্ষা পরিশ্রমের
সূর্য দেব ও নন যে সদয়
কাল ই করে হরণ কালকে
সুঠাম শরীরে মরচে ধরে
শরীর যে চায় আরাম, ছায়া
চায়ের দোকানের কাঠের বেঞ্চি তাইত একটি পরম পাওয়া।

একটি চোরের কথা

খোকন সোনার বয়েস তখন প্রায় দশ। একদিন রাতের বেলা হঠাত ই চিত্কারে  তার ঘুম ভেঙ্গে গেল। বাড়িতে নাকি চোর ঢুকেছে। সেই চোরের খোজে সারা পাড়া তখন ব্যস্ত। কিন্তু কোথায় সে? এই বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে হঠাত ই ছেলেটির চোখ গেল তার খাটের তলায়। সে যে ঠিক কি কারণ সেখানে নজর দিয়েছিল তা তার আর আজ মনে পরে না। হয়তো নিছকই কৌতুহল, বা এক অবচেতন মনের খেয়াল ই তাকে বাধ্য করেছিল নজর ঘোরাতে খাটের তলায়। কিন্তু আবিষ্কার তা তারই ভাগ্গে ঘটে গেল। চোর বাবাজীবন  তখন তার খাটের তলাতেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। খোকার মুখে থেকে একবার আওয়াজ বেরোতে না বেরোতেই পাড়া  শুধ্হু লোক আবার হাজির, আর এবারে চরের আর পালানোর রাস্তা ছিল না। কিন্তু ধরা পড়ার অনেক আগেই ধরা পড়ার  ভয়ে সে চর ততাক্ষণে আধমরা। তার অবস্থা দেখে আর তার কাচুমাচু মুখের দিকে তাকিয়ে, খোকার একটু আপসোস ই বোধ হয় হচ্ছিল, "কেন যে বেচারাকে ধরিয়ে দিতে গেলাম। না হয় একটু লুকিয়েই ছিল..!" কিন্তু ততক্ষণে যা হবার তা হয়ে গেছে। চোর গ্রেপ্তার, আর সবাই আবার নিজের নিজের বিছানায় নিদ্রা দেবীর আরাধনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। হয়ত ঘুমের মধ্যে তলিয়ে যেতে যেতে ছেলেটির মনের কোনো কনে ভাবনা তা বীজ পেয়েছিল, "চোরটার হলো কি?"

স্মৃতি থেকে লেখা

জীবনে অনেক ঘটনাই ঘটে যার ছায়া আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চলে অনেকটা অনুষঙ্গের মত। বাবার মুখ  থেকে তার ছোটবেলার গল্প অনেক বার শুনেছি। ওই গল্পগুলো আমাকে নিয়ে গেছে এক অন্য সময়ে। সেই সময়টা আমার কিছুটা দেখা বাংলা সিনেমার পর্দায় আবার কিছুটা জানা বঙ্গ সাহিত্যের মাধ্যমে। বাবা যতবার  ওই সময়ের কোনো কোনো কথা বলেছে ততবার আমি আমার মতো করে তার একটা ঘটনাক্রম , কিছু নাটকীয় মুহূর্ত, সাজিয়ে নিয়েছি। এটা  ছিল আমার ছোটবেলার, অবসর সময়ের এক প্রিয় খেলা।  বাবাকে অনেকবার বলেছি, "দাও না আমাকে তোমার স্মৃতির  একটা খসড়া বানিয়ে। আমি তাকে রূপ দেব আমার মতন করে। সে হবে আমার সাথী, থাকবে আমার পাশে তোমার স্মৃতি হয়ে।" বাবার দিচ্ছি দেব করেই সময় চলে যায়। সেটাই হলো মুশকিল। সময়ের এই চলে যাওয়াটাকে ফিরিয়ে আনার কোনো উপায় নেই। আমি চাই না আমার জীবনের এই অন্যতম স্মৃতি রক্ষা করার  কাজটা আটকে যাক। তাই নিজেই নেমে পড়লাম এই কাজে। জানি আমার স্মৃতিতে অতটা টাটকা নয় ব্যাপারটা কিন্তু আশা করি অন্তত পরিষ্কার না হলেও ঘটানার কিছু রেখা আমি লিখে উঠতে পারব। তাই বা কম কি? এই আশা নিয়ে আমার এই পথচলা শুরু। আমি শুধুই চাইব আমার এই ছোট চাহিদাটা পূর্ণ হবে। মনের মধ্যে আশঙ্কাও যে নেই তা নয়। কিন্তু মানুষ আশা আর প্রয়াস এ ছাড়া কি বা করতে পারে? যাই হোক, শুরু করা যাক তবে পথ চলা স্মৃতি বিজড়িত রাস্তা গুলো দিয়ে।